
বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা।
অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এই দুই উপদেষ্টা হলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তবে তাঁরা আরও সময় নিতে চেয়েছেন।
উপদেষ্টাদের অবস্থান
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, দুই উপদেষ্টার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
- মাহফুজ আলম: তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এখন পর্যন্ত আগ্রহ দেখাচ্ছেন না এবং সরকারে থাকতে চান। তিনি অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছিলেন।
- আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া: তিনি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে পদত্যাগ করতে পারেন। গত বছরের নভেম্বরে তিনি স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। গত ১৪ আগস্ট তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তিনি পদত্যাগ করবেন।
ছাত্র উপদেষ্টাদের আকাঙ্ক্ষা
ছাত্র উপদেষ্টারা চান, ছাত্র প্রতিনিধিদের কেউ না কেউ উপদেষ্টা পরিষদে শেষ পর্যন্ত থাকুক। তাঁরা মনে করছেন, কেউ না থাকলে উপদেষ্টা পরিষদে কেউ কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারেন।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও বিতর্ক
- পটভূমি: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ২৩ জন, যাদের মধ্যে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি।
- এনসিপি’র ঘনিষ্ঠতা: সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, এই দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘনিষ্ঠ এবং দলটির পরামর্শকের ভূমিকায় থাকেন।
- ছাত্র প্রতিনিধি মো. নাহিদ ইসলাম গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করে এনসিপি’র আহ্বায়ক হন।
- অন্যান্য দলের দাবি: বিএনপি উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ‘দলীয় লোকদের’ অপসারণ চেয়েছে। অন্যদিকে এনসিপির নেতারা মনে করেন, শুধু দুজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সরতে বলা গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ সরকার গঠনের সময়ই বিভিন্ন দলের কাছ থেকে নাম নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ করা হয়েছিল।
লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ মন্তব্য করেছেন, উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে যেসব বক্তব্য আসছে, তা সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর। এসব বক্তব্য জনগণের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করতে পারে। তাঁর মতে, দুই ছাত্র উপদেষ্টার উচিত পদত্যাগ করা অথবা ঘোষণা দেওয়া যে তাঁদের এনসিপির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই এবং তাঁরা নির্বাচন করবেন না।