শেষ হয় নি আর্থিক নির্মাণ, ২০৫৬ সাল পর্যন্ত চলবে নাগরিকের অদৃশ্য জরিমানা’।

পদ্মা সেতু। ছবি: জাহান
ওয়ালিদ আহমেদ অলি।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দুই বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এর নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি—তবে সেটি আর্থিক নির্মাণ। সেতুর বিশাল ঋণের বোঝা পরিশোধ এখনও চলছে, যা আগামী ২০৫৬ সাল পর্যন্ত চলবে।
লেখক বলছেন, এই নির্মাণের খরচ জোগানো হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রতিটি সাধারণ নাগরিকের পকেট থেকে, যা এক ধরনের ‘অদৃশ্য জরিমানা’।
যেভাবে জনগণের পকেট থেকে টাকা যাচ্ছে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাংকের স্বল্প সুদের (১ শতাংশ) ঋণ ফিরিয়ে দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ‘রাজনৈতিক জেদ’ দেখানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার আসল মূল্য এখন জনগণ পরিশোধ করছে।
- পরোক্ষ করের বোঝা: মোবাইল ফোন রিচার্জ, বিদ্যুৎ বা পানির বিল পরিশোধ, কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার প্রতিটি লেনদেনের মাধ্যমে জনগণ অজান্তে পদ্মা সেতুর ‘অদৃশ্য নির্মাণকাজে’ অর্থ দিচ্ছে।
- অতিরিক্ত জরিমানা: একটি পরিবারের মাসিক আয় ৫০ হাজার টাকা হলেও, বছরে প্রায় ১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত ‘জরিমানা’ হিসেবে গুনতে হচ্ছে। এই অর্থ রাষ্ট্র জনগণের অনুমতি ছাড়াই কেটে নিচ্ছে বলে এটিকে ‘অদৃশ্য জরিমানা’ বলাই যুক্তিযুক্ত।
সাংবাদিকের সত্য বলার নিদারুণ পরিণতি
সাংবাদিক শেখ মেহেদী হাসান নাদিম ২০১১ সালেই বিশ্বব্যাংকের ঋণ বাতিলের সময় এই ভয়াবহ পরিণতির কথা আঁচ করতে পেরেছিলেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, প্রতিদিন কোটি টাকার বেশি টোল আদায় হওয়ার পরেও কেন সেই টাকা দিয়ে সেতুর ঋণ পরিশোধ না করে জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে?
রাষ্ট্রের হাজার কোটি টাকা বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে নাদিম যখন রাজপথে নেমেছিলেন, তখন রাষ্ট্র তাঁর কণ্ঠরোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এর পুরস্কার হিসেবে নাদিমের ওপর নেমে আসে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন:
- তাঁর নামে একে একে সাতটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।
- সকল সরকারি সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নেওয়া হয়।
- চূড়ান্ত আঘাত হিসেবে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন তাঁর বাবার হাতে গড়া অর্ধশত বছরের পুরনো ‘দৈনিক জাহান’ পত্রিকার লাইসেন্স সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বাতিল করে দেয়।
