
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনফাইল ছবি : রয়টার্স
রয়টার্স, ভ্লাদিভস্তক থেকে
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ২৮
ইউক্রেনে মোতায়েন করা যেকোনো পশ্চিমা দেশের সেনারা রাশিয়ার হামলার বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা সুরক্ষার পদক্ষেপ নিয়ে দেশটির মিত্রদের আলোচনার মধ্যেই আজ শুক্রবার তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ জানিয়েছিলেন, ২৬টি দেশ যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে স্থল, সমুদ্র ও আকাশসীমায় আন্তর্জাতিক বাহিনীর তদারকি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মাখোঁর এই বক্তব্যের পরদিনই পুতিন এই হুঁশিয়ারি দিলেন।
‘বৈধ লক্ষ্যবস্তু’
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে, তাদের ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করার অন্যতম কারণ হলো পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে ইউক্রেনের জোটভুক্ত হওয়া থেকে এবং সেখানে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা থেকে বিরত রাখা।
আজ ভ্লাদিভস্তকে একটি অর্থনৈতিক ফোরামে পুতিন বলেন, “সামরিক অভিযানের এই সময়ে যদি সেখানে কিছু সেনা এসে হাজির হন, তাহলে আমরা ধরেই নেব যে বিনাশ করার জন্য তাঁরা বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবেন।”
পুতিন আরও বলেন, “যদি এমন কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যা দীর্ঘমেয়াদি শান্তির দিকে নিয়ে যাবে, তাহলে আমি ইউক্রেনের ভূখণ্ডে তাদের (পশ্চিমা সেনাদের) উপস্থিতির কোনো অর্থ দেখি না; এ বিষয়ে এটিই আমার শেষ কথা।”
পুতিনের এই বক্তব্য মস্কো এবং কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে ভবিষ্যৎ চুক্তির অধীনে ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়ে অবস্থানের বড় পার্থক্যকে স্পষ্ট করে।
ট্রাম্প ও জেলেনস্কির অবস্থান
ভবিষ্যৎ আক্রমণ থেকে সুরক্ষার জন্য ইউক্রেন পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে জোরালো সমর্থন চাইছে। এই সহায়তায় ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য একটি ‘ইচ্ছুক জোট’ সমন্বয় করছে এবং ইঙ্গিত দিয়েছে যে, যুদ্ধ শেষ হলে তারা ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করতে প্রস্তুত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে, ওয়াশিংটন ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করবে না, তবে আকাশপথের সুরক্ষাসহ অন্যান্য সহযোগিতা দিতে পারে।
পুতিন বলেন, “অবশ্যই রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ের জন্যই নিরাপত্তা নিশ্চয়তা থাকতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমি আবারও বলছি, অবশ্যই রাশিয়া এই সমঝোতাগুলো বাস্তবায়ন করবে। তবে এখনো কেউ আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেনি।”
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দীর্ঘদিন ধরে পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের চেষ্টা করে আসছেন। তবে পুতিন আজ বলেছেন যে, এ ধরনের বৈঠকের কোনো অর্থ দেখেন না, কারণ ইউক্রেনীয় পক্ষের সঙ্গে মূল বিষয়গুলো নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো বাস্তবে অসম্ভব হবে।