
নরেন্দ্র মোদি ও গৌতম আদানি।
ওয়াশিংটন পোস্ট।
চলতি বছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে গড়িমসি করার সময় ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির ব্যবসায় ঋণের চাপ বাড়ছিল। এই পরিস্থিতিতে নীরবে এগিয়ে আসে ভারত সরকার। ২৪ অক্টোবর দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এ প্রকাশিত এক খবর অনুযায়ী, আদানির ব্যবসাকে সুরক্ষা দিতে ভারত সরকার একটি বড় পরিকল্পনা নেয়।
গোপন সরকারি বিনিয়োগ পরিকল্পনা
- বিনিয়োগের প্রস্তাব: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এর হাতে থাকা গোপন সরকারি নথি অনুযায়ী, গত মে মাসে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (ডিএফএস) রাষ্ট্রায়ত্ত লাইফ ইনস্যুরেন্স করপোরেশন অব ইন্ডিয়ার (এলআইসি) মাধ্যমে আদানি গ্রুপে প্রায় ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ৩৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছিল।
- উদ্দেশ্য: ডিএফএস-এর ভাষায়, এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ছিল আদানি গ্রুপের প্রতি আবার বাজারের আস্থা তৈরিতে সহায়তা করা এবং অন্য বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা।
- বন্ডে একক অর্থায়ন: একই মাসে আদানির বন্দর ইউনিটের ৫৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ পুনঃ অর্থায়নের জন্য ছাড়া বন্ডে এককভাবে অর্থায়ন করে এলআইসি।
- সিদ্ধান্ত গ্রহণ: নথি থেকে জানা যায়, নীতি আয়োগ, এলআইসি ও ডিএফএস মিলে এই বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরি করে, যা পরে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন করে।
সমালোচনা ও ঝুঁকি
ভারতের করপোরেট খাতের বিশ্লেষক হেমেন্দ্র হাজারি বলেন, “এই সরকার আদানিকে রক্ষা করবে, তার কোনো ক্ষতি হতে দেবে না।” অস্ট্রেলীয় গবেষক টিম বাকলি বলেন, ভারত সরকারের সমর্থন থেকে বোঝা যায়, আদানি ‘ভিন্ন নিয়মে’ ব্যবসা চালানোর সুযোগ পাচ্ছেন এবং ‘স্বজনতোষণনির্ভর পুঁজিবাদ এখনো বেঁচে আছে’।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের আইনবিশেষজ্ঞ কুশ আমিন বলেন, এলআইসি দরিদ্র মানুষের জীবনবিমা প্রতিষ্ঠান। এমন ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ তাদের মূল লক্ষ্য ও দায়বদ্ধতার পরিপন্থী।
আদানি গ্রুপ অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, এলআইসি অনেক কোম্পানিতেই বিনিয়োগ করে এবং আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগ করে মুনাফাও করেছে। তারা আরও জানায়, “আমাদের প্রবৃদ্ধি মোদি সরকারের আগেই শুরু হয়েছে।”
