
বিএনপি (বাঁ থেকে), জামায়াত, এনসিপি।
বিশেষ প্রতিনিধি
ঢাকা
জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, বিশেষ করে গণভোটের সময়সূচি নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও সনদে সইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ১৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে।
তবে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তাঁরা সনদের চূড়ান্ত কপি দেখে তারপরই স্বাক্ষরের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিএনপির প্রস্তুতি ও অবস্থান
বিএনপির পক্ষ থেকে সনদে স্বাক্ষরের জন্য দুজন নেতাকে চূড়ান্ত করা হয়েছে:
- স্বাক্ষরকারী: মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
বিএনপির নেতারা মনে করেন, জুলাই সনদ সংবিধান ও রাষ্ট্র সংস্কারের নতুন ভিত্তি তৈরি করবে। গণভোটের সময় নিয়ে তারা বাস্তবসম্মত ঐকমত্য চায় এবং জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট হলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছি—জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট—এর চেয়ে সহজ, ভারসাম্যপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর কিছু হতে পারে না।”
জামায়াত ও এনসিপির সতর্কতা
- জামায়াতে ইসলামী: দলের পক্ষ থেকে নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারকে স্বাক্ষরকারী হিসেবে ঠিক করা হয়েছে। তবে জামায়াত বলছে, জুলাই ঘোষণাপত্রে তাদের দাবি উপেক্ষিত হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে তারা এবার সতর্ক। গণভোটের রূপ ও সময় কীভাবে নির্ধারিত হচ্ছে, তা দেখার পর তাঁরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছে।
- এনসিপি: দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নাম স্বাক্ষরকারী হিসেবে ঠিক করা হয়েছে। দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন জানান, সনদের চূড়ান্ত কপি ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া জানার পরই এনসিপি পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।
অন্যান্য দল: নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন ও এবি পার্টিও সনদে স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিয়েছে।
গণভোটের সময়সূচি নিয়ে মতবিরোধ
দলগুলো জনগণের সম্মতিক্রমে সনদকে বৈধ করার উদ্দেশ্যে গণভোট আয়োজনের বিষয়ে একমত হলেও, কবে এবং কীভাবে গণভোট হবে, তা নিয়ে প্রধান দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়ে গেছে:
- জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট: বিএনপি ও তার মিত্ররা এই মতের পক্ষে।
- জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট: জামায়াত, এনসিপিসহ আরও কয়েকটি দল মনে করে, নির্বাচনের আগে গণভোট হলে জনগণের মনোযোগ ও অংশগ্রহণ বেশি থাকবে।
অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্ব দেবেন বলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে।