
ইন্দোনেশিয়ায় আইনপ্রণেতাদের বাড়তি সুযোগ-সুবিধার বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। বিক্ষোভ–সংঘর্ষের সময় দুই হাত প্রসারিত করে দাঙ্গা পুলিশের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে একজন আন্দোলনকারী। ২৮ আগস্ট জাকার্তায় পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে।ছবি: রয়টার্স
রয়টার্স, জাকার্তা
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩: ১৫
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা সহিংস বিক্ষোভের পর গত শুক্রবার বিকেলে ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টের সামনে এক অভিনব প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ভোজের আয়োজন করেন বিক্ষোভকারীরা। দেশটির সরকারি ছুটির দিনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এই ‘বনভোজন বিক্ষোভ’-এ কবিতা ও বই পাঠের মতো সৃজনশীল কর্মসূচিও রাখা হয়।
আন্দোলনকারীরা এসময় আইনপ্রণেতাদের অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধার সমালোচনা করেন এবং আটক বিক্ষোভকারীদের মুক্তি ও বেসামরিক নিরাপত্তা দায়িত্ব থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ইন্দোনেশিয়ার পদজাদজারান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা ভিনসেন্ট থমাস কম্পাস টিভিকে বলেন, “আমরা শুধু রাগে চিৎকার করি না, বরং শান্ত ও সৃজনশীল উপায়ে আমাদের ক্ষোভ প্রকাশ করি। আমরা একসঙ্গে বনভোজন করি এবং উদ্ভাবনী উপায়ে আমাদের প্রতিবাদ জানাই।”
গত সপ্তাহে সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শিক্ষার্থী, শ্রমিক এবং অধিকার সংগঠনের সদস্যরা জাকার্তার রাস্তায় নেমে আসেন। এরপর এক বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় এক ট্যাক্সিচালক নিহত হলে সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
জাকার্তা পুলিশের মুখপাত্র আডে আরি শ্যাম ইন্দ্রাদি জানান, গতকাল রাজধানীজুড়ে পুলিশ ও সেনাসহ ১ হাজার ৩৭১ জন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, জাকার্তা থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরের সলো শহরে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ ও বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা চালিয়েছেন।
এর আগে ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে সংসদ সদস্যদের ভাতা ও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কৌশল নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন। তবে তারা এখনো প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সঙ্গে বৈঠকের দাবি আদায়ে সফল হননি।
অধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১০ জন নিহত এবং ১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। নিউইয়র্কভিত্তিক অধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, দেশজুড়ে চলমান দমন অভিযানে কর্তৃপক্ষ তিন হাজারের বেশি মানুষকে আটক করেছে।
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা নিজেদের অবস্থান তুলে ধরলেও সরকার নতুন কোনো ছাড়ের কথা জানায়নি। রাষ্ট্রসচিব প্রসেতিও হাদি জানান, সরকার শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করবে। বৈঠক শেষে ইসলামিক স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হ্যান্ডি মুহাররাম বলেন, “আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, অবিলম্বে পুলিশ সংস্কার করা হোক।”