মামলার পর স্বামী কারাগারে, বারবার পালিয়ে স্বামীর বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন স্ত্রী

কেন্দুয়া উপজেলা প্রতিনিধি:
নেত্রকোণার মদন উপজেলায় প্রেমের সম্পর্কের জেরে কোর্ট ম্যারেজ করা এক দম্পতিকে ঘিরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলার পর স্বামী কারাগারে গেলেও অপ্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী নাদিয়া আক্তার (১৬) স্বামীর মুক্তির দাবিতে বারবার বাবার জিম্মা থেকে পালিয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে আসছেন।
জানা গেছে, দুই বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর পাপন মিয়া (২০) ও নাদিয়া আক্তার কোর্ট ম্যারেজ করেন। এক মাস সংসার করার পরই নাদিয়ার মা ইয়াসমিন আক্তার গত ১৪ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পাপন মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পাপন মিয়াকে আটক করে কারাগারে পাঠালেও অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় নাদিয়াকে তার পিতা-মাতার জিম্মায় হস্তান্তর করে।
বারবার পলায়ন ও ভাঙচুরের অভিযোগ
পুলিশ পিতা-মাতার জিম্মায় দিলেও নাদিয়া দুই দিন পরই রাতের আঁধারে পালিয়ে স্বামীর বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং প্রশাসন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে স্বামী পাপন মিয়ার মুক্তির দাবি জানান। স্থানীয় প্রভাবশালীরা তাকে আবার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেও নাদিয়া আবারও পালিয়ে স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এর জেরে গত ১২ অক্টোবর সকালে নাদিয়ার বাবা-মা ও দুই ভাই স্বামীর বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর চালান এবং মেয়েকে জোরপূর্বক বের করার চেষ্টা করেন।
স্ত্রীর অনড় দাবি
এ বিষয়ে নাদিয়া আক্তার বলেন, “আমি দুই বছর প্রেমের পর পাপনের সঙ্গে কোর্ট ম্যারেজ করেছি। আমার মা-বাবা আমাকে ভয় দেখিয়ে থানায় পাপনের বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধ্য করেছে। তারা আমার জন্ম নিবন্ধনে ইচ্ছাকৃতভাবে বয়স কম দিয়েছে। আমার প্রকৃত বয়স ১৮ বছর। কেউ যদি আমাকে স্বামীর বাড়ি থেকে জোর করে নিয়ে যেতে চায়, আমি তাদের নাম লিখে আত্মহত্যা করব।”
কাইটাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের আজাদ বলেন, মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে তিনবার পিতা-মাতার জিম্মায় দেওয়া হলেও সে বারবার পালিয়ে স্বামীর বাড়ি চলে যাচ্ছে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিয়ে সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছেন।
অন্যদিকে, ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। স্থানীয় মহলে ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।