
আজ মঙ্গলবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরআই আয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অপরিহার্য স্বাধীনতা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠানে অতিথিরা। রাজধানীর আমারি হোটেলেছবি।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।
বিগত সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যাদের দৃশ্যমান ব্যবসা নেই, তাদের ঋণ দেওয়া হয়েছে এবং কয়েকটি পরিবারের কাছে ব্যাংকগুলোকে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আলোচকেরা।
আজ সকালে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা অপরিহার্যতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই মন্তব্য করেন।
অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা
বক্তাদের মতে, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে:
- খেলাপি ঋণ: খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
- অর্থ পাচার: দেশ থেকে ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে গেছে।
- নীতির ভুল: রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সুদহার ও ডলারের দাম ঠিক করা হয়েছে। ডলারের ওপর চাপ কমাতে দাম ধরে রাখা হয়েছিল, যা পরে বড় চাপ সৃষ্টি করে।
পিআরআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান বলেন, বাজার ব্যবস্থা যদি মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে মূল্যস্ফীতি কমে আসে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক কখনো প্রকৃত স্বাধীনতা পায়নি এবং আমলাদের গভর্নর করা হয়েছে।
স্বাধীনতার দাবি ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা
বক্তারা মনে করেন, দেশের সমস্যা সমাধানে প্রধান উদ্যোগগুলোর মধ্যে একটি হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা।
- ফাহমিদা খাতুন (সিপিডি): তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের সব সূচক খারাপ হয়ে পড়েছে এবং এত দিন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংককে ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁর মতে, অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যাংকিং বিভাগ বিলুপ্ত করে দিতে হবে এবং ব্যাংক খাতে দ্বৈত শাসন চলবে না। এই স্বাধীনতা কার্যকর করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে।
- আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (বিএনপি): তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংকিং বিভাগ বিলুপ্ত করবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে স্বায়ত্তশাসন নয়, স্বাধীনতা দিতে হবে। তিনি টাকা ছাপানো থেকে বের হয়ে এসে অর্থনীতির সবকিছু অটোমেশন বা ক্যাশলেস লেনদেন করার পক্ষে মত দেন।
- নাসিম মঞ্জুর (অ্যাপেক্স): তিনি বলেন, নীতির ধারাবাহিকতা থাকা জরুরি এবং ব্যাংকিং বিভাগকে অবশ্যই বন্ধ করে দিতে হবে।