
১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।ফাইল ছবি
প্রথম আলো ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৬
জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহকে বাস্তব রূপ দিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের মর্যাদাপূর্ণ হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই বৃত্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ পাবেন। এতে রয়েছে আংশিক বা পূর্ণ অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের আর্থিক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিয়ে পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।
হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য
১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে একটি আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন। হোনজো ফাউন্ডেশনের মূল উদ্দেশ্য হলো উন্নয়নশীল দেশের সেই সব মেধাবী শিক্ষার্থীকে সাহায্য করা, যারা ভবিষ্যতে নিজ দেশের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। একই সঙ্গে, এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতেও ভূমিকা রাখে।
আবেদনের যোগ্যতার শর্ত
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলো পূরণ করতে হবে:
- জাপান ব্যতীত বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে (মাস্টার্স বা পিএইচডি) ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।
- বর্তমান শিক্ষার্থী, যারা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তারাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তারা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।
- যারা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তারাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে যদি তারা একটি বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারেন, তাহলে আবেদন করতে পারবেন।
গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলি
- বয়সসীমা: পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।
- দায়বদ্ধতা: পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।
- যোগাযোগ ও নেটওয়ার্কিং: আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।
- ভাষাগত দক্ষতা: দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় নেওয়া হবে।
বৃত্তির আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:
- টিউশন ফি: এটি একটি আংশিক অর্থায়নের বৃত্তি, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচ কমাতে সাহায্য করে।
- মাসিক ভাতা: বৃত্তির অধীনে শিক্ষার্থীদের একটি নির্দিষ্ট মাসিক ভাতা প্রদান করা হবে, যা তাদের জীবনযাত্রার খরচ মেটাতে সাহায্য করবে।
- ১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য মাসিক ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।
- ৩ বছরের কোর্সের জন্য মাসিক ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।
- ৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য মাসিক ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।
- ভ্রমণ অনুদান: নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট (ভ্রমণ অনুদান) দেওয়ার সুযোগও থাকতে পারে।
- অন্যান্য সুবিধা: আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ, জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগ করা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।
এই বৃত্তি মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য জাপানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের একটি অসাধারণ সুযোগ। যোগ্য ও আগ্রহী শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করে এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেন। আরও পড়ুন (https://tinyurl.com/3693fpp8)
হোনজো ফাউন্ডেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের লিঙ্ক হলো:
https://www.honzofoundation.org/

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।