
নরেন্দ্র মোদি ও সি চিন পিংফাইল ছবি : রয়টার্স।
এনডিটিভি নয়াদিল্লি
তিব্বতের লুনজে বিমানঘাঁটিতে চীন ৩৬টি মজবুত বিমান বাংকার, নতুন প্রশাসনিক ব্লক এবং একটি নতুন অ্যাপ্রন নির্মাণ করেছে। এই ঘাঁটিটি অরুণাচল প্রদেশের ভারত ও চীন সীমান্তের ম্যাকমোহন লাইন থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
লুনজে ঘাঁটিতে নতুন বিমান বাংকার নির্মাণের ফলে চীন এখন তাদের যুদ্ধবিমান ও ড্রোন সিস্টেমকে আরও সামনে মোতায়েন করার সুযোগ পাবে। এতে অরুণাচল প্রদেশ ও আসামে অবস্থিত ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) ঘাঁটি থেকে আকাশপথে যেকোনো হুমকির দ্রুত জবাব দিতে সক্ষম হবে চীন।
ভারতের সাবেক বিমানবাহিনী প্রধানদের মন্তব্য
- ভবিষ্যৎ যুদ্ধের প্রস্তুতি: আইএএফের সাবেক প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বি এস ধানোয়া এনডিটিভিকে বলেন, ৩৬টি মজবুত বিমান বাংকার নির্মাণ স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভবিষ্যতে কোনো ঘটনা ঘটলে তাদের কৌশলগত ফাইটার ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার লুনজে ঘাঁটি থেকেই তাদের সেনাবাহিনীকে সহায়তা দেবে। তিনি মনে করেন, মজুত গোলাবারুদ ও জ্বালানি সহ ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ সম্ভবত তৈরি করা হয়েছে এবং চীন এই নির্মাণকাজ শুরু করার অর্থ হলো তারা ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
- গুরুতর কৌশলগত হুমকি: আইএএফের সাবেক উপপ্রধান এয়ার মার্শাল অনিল খোসলা বলেন, এসব ঘাঁটির আধুনিকীকরণ চীনের ভবিষ্যতের যুদ্ধ পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং এটি ভারতের জন্য ‘গুরুতর কৌশলগত হুমকি’। তিনি বলেন, এই মজবুত বিমান বাংকারগুলো ভারতীয় বিমান হামলা বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে সুরক্ষা দেবে, যার ফলে ‘সংঘর্ষের শুরুতে ঘাঁটিটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা অনেক বেশি কঠিন হবে।’
- সুবিধা সংকোচিত: আইএএফের সাবেক উপপ্রধান এয়ার মার্শাল এসপি ধারকর বলেন, তিব্বতের উচ্চতা এবং ভূখণ্ড এতদিন ভারতকে সুবিধা দিলেও, চীনের আধুনিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি ও বৃহত্তর অবকাঠামো নির্মাণের ফলে ভারতের সেই সুবিধা কিছুটা সংকুচিত হচ্ছে।
চীনের ড্রোন ও কৌশলগত গুরুত্ব
- দ্রুত মোতায়েন: টিংরি, লুনজে ও বুরংয়ের মতো বিমানঘাঁটিগুলো প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলএসি) খুব কাছে, ৫০ থেকে ১৫০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। এত কাছে থাকার কারণে পিএলএ বিমানবাহিনী দ্রুততম সময়ে সীমান্তে সাড়া দিতে পারবে।
- ড্রোন ব্যবহার: চীন সিএইচ–৪ মনুষ্যবিহীন এরিয়াল ভেহিকেল (ইউএভি) ব্যবহার করছে, যা উচ্চ উচ্চতা থেকে স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে সক্ষম।
চীন তাদের বিদ্যমান বিমানঘাঁটিগুলোর আধুনিকায়ন এবং নতুন ঘাঁটি নির্মাণ করে দীর্ঘ দশক ধরে হিমালয় বরাবর ভারতীয় বিমানবাহিনীর ১৫টি প্রধান বিমানঘাঁটির মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে।
