তেলেগু চলচ্চিত্রের মাধুবালা, যিনি ব্যক্তিগত যন্ত্রণায় হারিয়ে যান পাদপ্রদীপের আলো থেকে

সাবিত্রী।ছবি
বিনোদন ডেস্ক
তেলেগু সিনেমার মহাতারকা সাবিত্রী, যাঁকে একসময় মাধুবালা ও মীনা কুমারীর সৌন্দর্যের সঙ্গে তুলনা করা হতো, তাঁর জীবনের গল্প দর্শকদের মনে আজও গভীর ছাপ রেখেছে। ১৯৮০-এর দশকে তিনি ছিলেন দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ১৯৬০-এর দশকে তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ১০০ কোটি রুপি। কিন্তু ব্যক্তিগত নানা ঝামেলা, বিশেষত স্বামীর প্রতারণা, তাঁকে পাদপ্রদীপের আলো থেকে চিরতরে হারিয়ে দেয়। মাত্র ৪৭ বছর বয়সেই তিনি মারা যান।
স্বপ্নের শুরু ও ‘জেমিনি’র সাথে প্রেম
ছোটবেলা থেকেই নাচ ও অভিনয়ে দক্ষতা দেখানো সাবিত্রী কিশোর বয়সে সিনেমার জগতে প্রবেশের চেষ্টা শুরু করেন। ১৯৫০-এর দশকের শুরুর দিকে মাদ্রাজের জেমিনি স্টুডিওসে কাজের সুযোগ খোঁজার সময় তিনি রামাসমি গণেশনের (যিনি পরবর্তী সময় ‘জেমিনি’ নামে পরিচিত হন) সঙ্গে পরিচিত হন। গণেশন তখন স্টুডিওতে কাস্টিং সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। তিনিই সাবিত্রীর ছবি তুলে লিখেছিলেন, ‘সুযোগ দিলে ভালো হবে।’
পরবর্তী সময় সাবিত্রী চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন এবং ১৯৫২ সালে এন টি রামা রাওয়ের সঙ্গে ‘পেল্লি চেসি ছুডু’ সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা পান। গণেশনও অভিনয় শুরু করেন এবং তাঁদের বন্ধুত্ব ক্রমে প্রেমে পরিণত হয়। সাবিত্রী ও গণেশন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে, গণেশন তখন এরই মধ্যে বিবাহিত ছিলেন।

সাবিত্রী। ছবি: ইন্সটাগ্রাম থেকে
গোপন বিয়ে ও প্রতারণা
সাবিত্রী ও গণেশন তাঁদের বিয়ের খবর প্রথমে গোপন রাখেন। এই বিষয়টি প্রকাশ পায়, যখন সাবিত্রী একটি হেয়ার অয়েলের বিজ্ঞাপনে স্বাক্ষর দেওয়ার সময় ‘সাবিত্রী গণেশ’ নামে স্বাক্ষর করেন। তখনই গণেশনের একাধিক সম্পর্ক ও প্রতারণার খবর গণমাধ্যমে শিরোনামে আসে।
সিনেমার ব্যর্থতা ও গণেশনের প্রতারণা মিলিয়ে সাবিত্রীর জীবন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তিনি ধীরে ধীরে মদ্যপানের নেশায় ডুবে যান। তাঁর মেয়ে বিজয়ার ভাষ্য ছিল, “আম্মা তাঁর সমস্যা সামলাতে পারতেন না। সব ভুলে থাকতে মদে ডুবে থাকতেন।” ক্যারিয়ারের শীর্ষে থাকার পরেও ব্যক্তিগত যন্ত্রণায় তাঁর জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।
