‘গণভোটের আদেশ প্রধান উপদেষ্টাকেই দিতে হবে, রাষ্ট্রপতি দিলে বিপ্লব প্রশ্নবিদ্ধ হবে’

এনসিপির বরিশাল জেলা ও মহানগর সমন্বয়সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেন দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। রোববার বিকেলে বরিশাল শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে।ছবি
ভোলা প্রতিনিধি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না, সংস্কার হলেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আজ রোববার (২ নভেম্বর) ভোলা জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এনসিপির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি মন্তব্য করেন, “এই সরকারের যদি সংস্কারের ম্যান্ডেট না থাকে, এই সরকারের জুলাই সনদ ঘোষণার ম্যান্ডেট না থাকে, তাহলে এই সরকার কোন ম্যান্ডেটে নির্বাচন দেবে?”
নির্বাচন, সংস্কার ও গণভোট
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, নির্বাচন অবশ্যই ফেব্রুয়ারিতে হওয়া উচিত। তিনি বলেন, “নির্বাচনকে তারাই পিছিয়ে দিতে চায়, যারা এই সরকারের সঙ্গে জুলাই সনদকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়।” তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, এই সরকারের যেমন নির্বাচনের ম্যান্ডেট রয়েছে, তেমনি জুলাই সনদের ম্যান্ডেটও রয়েছে, তেমনি সংস্কারেরও ম্যান্ডেট রয়েছে। সুতরাং সংস্কার যথাসময়ে হলে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে।
- পিআর নিয়ে অবস্থান: তিনি বলেন, “আমরা উচ্চকক্ষে পিআর চাই, তবে জামায়াতের মতো পিআর চাই না। আমাদের অবস্থান দৃঢ় ও স্পষ্ট—বাংলাদেশের পুনর্গঠনে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতির বিকল্প নেই।”
- ঐক্যের আহ্বান: তিনি বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের রক্ত ও ত্যাগকে স্মরণ করে বলেন, এগুলোকে অসম্মান করা মানে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। তিনি মতপার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ পুনর্গঠনের আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টাকেই আদেশ জারি করতে হবে
গণভোটের আদেশ কার মাধ্যমে আসবে, সেই বিষয়ে এনসিপি’র এই নেতা স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন:
“গণভোটের আদেশ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। যারা ফ্যাসিবাদের প্রতীক চুপ্পুর (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন) কাছ থেকে সনদ নিতে চায়, তারা দেশকে বিপথে নিতে চায়।”
তিনি আরও বলেন, গণভোটের পাশাপাশি জুলাই সনদের আদেশও প্রধান উপদেষ্টাকেই জারি করতে হবে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আদেশ দিলে জুলাই বিপ্লব প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তিনি অধ্যাদেশ বা প্রজ্ঞাপন নয়, অর্ডার (আদেশ) জারির দাবি জানান।
ভোলার সমস্যা ও সাংগঠনিক প্রস্তুতি
ভোলায় জেলা সমন্বয় সভায় নদীভাঙন প্রতিরোধ, গ্যাস ব্যবহার করে শিল্প স্থাপন, ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ, চিকিৎসকসংকট ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়েও আলোচনা হয়। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এনসিপি এসব যৌক্তিক দাবিতে ভোলাবাসীর পাশে থাকবে।
আগামী নির্বাচনে এনসিপি কারও সঙ্গে জোট গঠন করবে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমাদের সঙ্গে জোট হবে কেবল সংস্কারের পক্ষে থাকা দলগুলোর সঙ্গে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়েছেন, তাঁরাই এনসিপির প্রকৃত সহযোদ্ধা।” তিনি জানান, এনসিপি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।
