
সম্পাদকীয়।
দৈনিক জাহান ডেস্ক।
অসতর্কতাবশত এক শিক্ষার্থীর ফেলা থুতু অন্য এক শিক্ষার্থীর শরীরে লাগাকে কেন্দ্র করে ঢাকার আশুলিয়ায় দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এই নৈরাজ্যিক কর্মকাণ্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সামাজিক অসহিষ্ণুতা ও আইনশৃঙ্খলার ভঙ্গুর পরিস্থিতিকে তুলে ধরেছে।
সংঘর্ষ ও ক্ষয়ক্ষতি
গত রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত আশুলিয়ার খাগান এলাকার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, হামলা ও সংঘর্ষ হয়।
- ক্ষয়ক্ষতি: সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীর একটি মেসে হামলা চালান। অন্যদিকে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটিতে হামলা চালিয়ে:
- ১৩টি গাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেন।
- উপাচার্য, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রার কক্ষ ভাঙচুর করেন।
- সিটি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের দাবি, এতে তাদের ২০-২৫ কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে।
- আহত: দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৫০ শিক্ষার্থী আহত হন।
- সূত্রপাত: এত বড় নৈরাজ্যের সূত্রপাত হয়েছিল অসতর্কতাবশত থুতু গায়ে লাগার মতো অতি তুচ্ছ এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
উদ্বেগ ও ব্যর্থতা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেখানে উচ্চশিক্ষা একজন শিক্ষার্থীকে পরমতসহিষ্ণু, উদার ও মানবিক করে তোলার কথা, সেখানে আমরা তার বিপরীত যাত্রা দেখছি। এই পরিস্থিতি শিক্ষাদর্শনে বড় গলদ থাকার ইঙ্গিত দেয়।
- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা: দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কয়েক ঘণ্টা ধরে সংঘাতে লিপ্ত থাকলেও, সেটা থামাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কার্যকর ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। এটিকে পুলিশের বড় ব্যর্থতা বলে মনে করা হচ্ছে।
- বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা: শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে এবং সংঘাত থামাতে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, প্রক্টোরিয়াল টিম ও ছাত্র উপদেষ্টাদের ভূমিকাও যথেষ্ট ছিল না বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
শিক্ষাজীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এবং চরম উদ্বেগের এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য এমন নৈরাজ্যের অবসান হওয়া জরুরি।
