
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।ফাইল ছবি
প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৯
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রচার চালানোর সময় শেষ হচ্ছে আগামীকাল রোববার রাত ১০টায়। এখন শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। তাঁরা নিরাপদ, বৈষম্যহীন, সম্প্রীতিমূলক ও শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। আজ শনিবার প্রচার-প্রচারণার ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজেদের প্রতিশ্রুতি ও অভিযোগ নিয়ে কথা বলেন।
নারীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস
দুপুরে নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তিনি নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, ধর্ম, বর্ণ, গোত্রনির্বিশেষে প্রত্যেকের সমান অধিকার ভোগ করা, সহনশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা, সবার ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাসহ
নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে আবিদুল বলেন, নিরাপদ ক্যাম্পাস তখনই হবে, যখন এই ক্যাম্পাসের প্রতি ইঞ্চি মাটি নারী শিক্ষার্থীর জন্য সমানভাবে নিরাপদ হবে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে এই প্রার্থী বলেন, ‘আমরা দেখেছি কিছু প্রার্থী ক্লাসরুমে সরাসরি প্রচার চালাচ্ছে, যা স্পষ্টভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। বিষয়টি আমরা মৌখিকভাবে জানালেও নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ পাইনি।’
ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের আন্দোলনে আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। তবে পরে কিছু ট্যাগিং-ফ্রেমিং দেখা গেছে, যা বিরাজনীতিকরণের অপচেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। আমরা চাই সহনশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠুক, যেখানে মতভেদ থাকবে, বিতর্ক হবে, কিন্তু দিন শেষে রাষ্ট্রের স্বার্থে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।’
প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ভোটবিমুখ করতে চাচ্ছে
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি পদপ্রার্থী আব্দুল কাদের অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বুঝে হোক বা না বুঝে হোক কোনো একটি গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে এবং শিক্ষার্থীদের ভোটবিমুখ করার একটি কৌশল চালানো হচ্ছে।
দুপুরে বিজয় একাত্তর হলের সামনে এই অভিযোগ তুলে ধরেন আব্দুল কাদের। হল থেকে ভোটকেন্দ্রগুলো দূরে নির্ধারণ করাকে তিনি শিক্ষার্থীদের ভোটবিমুখ করার অন্যতম কারণ হিসেবে দাবি করেন।
আব্দুল কাদের বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্র হল থেকে দূরে স্থাপন করা হয়েছে যেন তাদের ভোট দেওয়ার আগ্রহ কমে যায়। একই সঙ্গে সেনা মোতায়েনের কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক তৈরি করেছে, অন্যদিকে পরীক্ষা চলমান রেখেছে। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এখনো সময় আছে। এত বছর পর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা যেন তাদের ডাকসুকে কার্যকর করতে পারে, এ সুযোগ নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব।

সূর্য সেন হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ভোটের প্রচারে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আবদুল কাদের।
ফাইল ছবি
শিক্ষকদের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে আব্দুল কাদের বলেন, ‘যে শিক্ষক ক্লাস নেবেন, তিনি তাঁর কারিকুলাম, অ্যাকটিভিটিজ, কতগুলো ক্লাস নেবেন, কী কী ক্লাস নেবেন—সবকিছু আমাদের ওয়েবসাইটে লিপিবদ্ধ থাকবে। একই সঙ্গে শিক্ষক যে ক্লাস নেবেন, সেটা ভিডিও আকারে ওয়েবসাইটে থাকবে। সেটা দেশের মানুষ দেখবে, শিক্ষকদের সহকর্মীরা দেখবে। সাবটাইটেলের মাধ্যমে সারা দেশের, এমনকি সারা বিশ্বের মানুষ দেখবে। তখন শিক্ষক সচেতন হবেন আসলে আমি কী পড়াচ্ছি।’

নির্বাচনী প্রচারণায় ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের’ ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম
ফাইল ছবি
নির্বাচন কমিশন অপেশাদার আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের’ ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম। দুপুরে প্রচারের ফাঁকে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো অভিযোগ দিয়েছি, তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ার কথা বলছি, কিন্তু বহিরাগতদের এনে কীভাবে নিরাপদ ক্যাম্পাস হবে?’
সাদিক কায়েম বলেন, প্রতিবছর ক্যাম্পাসে যেভাবে পরীক্ষা হয়, সেভাবে ডাকসু নির্বাচন যেন একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়, সেই কাজ করা হবে। ডিপার্টমেন্টে যাদের ভালো ফল থাকবে, একাডেমিক এক্সিলেন্ট থাকবে, তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে। বিগত সময়ে রাজনৈতিক মতাদর্শের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হতে দেখা গেছে।
আবাসন সংকট বিষয়ে সাদিক কায়েম বলেন, আবাসন সংকট দীর্ঘমেয়াদি। এই সংকট নিরসনে হল নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাধ্য করা হবে। স্বাস্থ্য ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা যে আশা নিয়ে ভর্তি হয়, তা পূরণের পরিবেশ তৈরি করা হবে।