
আইএইচপিএলে ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে ক্রিস গেইল।ফেসবুক ছবি
খেলা ডেস্ক
ভারতের ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরে আয়োজিত ইন্ডিয়ান হেভেনস প্রিমিয়ার লিগ (আইএইচপিএল) টুর্নামেন্টটি বিশ্ব ক্রিকেটের নামি তারকাদের জন্য মহা বিড়ম্বনা নিয়ে এসেছে। ক্রিস গেইল, থিসারা পেরেরা, জেসি রাইডারের মতো বিখ্যাত খেলোয়াড় ও ম্যাচ কর্মকর্তাদের হোটেলে রেখে শহর থেকে পালিয়ে গেছেন লিগের আয়োজকেরা। তাঁদের পারিশ্রমিক বা হোটেলের বিল কিছুই পরিশোধ করা হয়নি।
এই টুর্নামেন্টে খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানেরও। গত ১৫ অক্টোবর টুর্নামেন্টের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম পেজে প্রকাশিত ভিডিওতে সাকিবকে এই টুর্নামেন্টে ‘অংশ নেবেন’ বলতে দেখা গেলেও পরে তিনি খেলেছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যেভাবে উধাও হলেন আয়োজকেরা
- ঘটনা: ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে গত ২৫ অক্টোবর আট দল নিয়ে শুরু হওয়া আইএইচপিএল শেষ হওয়ার কথা ছিল ৮ নভেম্বর।
- উধাও: শনিবার সকালে খেলোয়াড়দের জানানো হয়, কারিগরি কারণে দিনের খেলা বাতিল করা হয়েছে। এরপর রোববার সকালে হোটেলে থাকা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা জানতে পারেন, আয়োজকেরা আগের রাতেই শ্রীনগর ছেড়ে চলে গেছেন।
- বিড়ম্বনা: হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, আয়োজকেরা কোনো বিল পরিশোধ করেননি। প্রায় ৪০ জনের মতো খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা হোটেলেই আটকা পড়েছিলেন।

ইসিবি কর্মকর্তা মেলিসা জুনিপার শ্রীনগরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন
ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি
গেইলসহ তারকাদের ক্ষোভ
ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) কর্মকর্তা মেলিসা জুনিপার, যিনি আম্পায়ারিং করতে গিয়েছিলেন, সাংবাদিকদের বলেন, “আয়োজকেরা হোটেল থেকে পালিয়ে গেছেন। তারা হোটেল, খেলোয়াড় বা আম্পায়ার কারও বিল পরিশোধ করেননি। আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছি যেন সবাই বেরিয়ে যেতে পারে।”
শ্রীনগরের এক জ্যেষ্ঠ হোটেল কর্মকর্তা জানান, গেইলসহ কয়েকজন খেলোয়াড় অবশ্য শনিবারই হোটেল ছেড়ে চলে গেছেন। গেইল ছাড়াও শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা, নিউজিল্যান্ডের জেসি রাইডার, দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি এবং ওমানের আয়ান খান এই টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েছিলেন।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার পারভেজ রসুল জানান, কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড় হোটেলে আটকা পড়েছিলেন। পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা বেরিয়ে যান।
অর্থসংকট ও সরকারি সংশ্লিষ্টতা
স্থানীয় এক ক্রিকেটার ধারণা করছেন, আয়োজকেরা সম্ভবত ধারণাই করতে পারেননি এমন একটি টুর্নামেন্ট চালাতে কত বড় বাজেট প্রয়োজন। শেষ মুহূর্তে স্পনসররা সরে যাওয়ায় অর্থসংকট তৈরি হয়েছিল।

বাক্সপেটরা পড়ে আছে বকশি স্টেডিয়ামে।
ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি
টুর্নামেন্টটির আয়োজক ছিল যুবা সোসাইটি মোহালি নামের একটি সংস্থা। ২২ অক্টোবরের একটি সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএইচপিএল নিয়ে প্রস্তুতি সভার কথা উল্লেখ ছিল, যেখানে বকশি স্টেডিয়ামে ২৫-৩০ হাজার দর্শক উপস্থিত থাকার অনুমান করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দর্শক উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক, টিকিটের দাম কমিয়েও সাড়া মেলেনি।
