
ধোঁয়া উঠছিল তখনো। নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। গতকাল সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজেছবি: ফায়ার সার্ভিস।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে (পণ্য রাখার স্থান) গত শনিবারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মুহিবুল ইসলামের মতো অনেক ছোট ব্যবসায়ী বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। যেসব পণ্য পুড়েছে, তার অনেকগুলোই বিমা সুবিধার আওতায় নেই। শীতে কসমেটিকস বিক্রির ভরা মৌসুমের পণ্য পুড়ে যাওয়ায় বেলাফেস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মুহিবুল ইসলাম বড় বিপদের কথা জানিয়েছেন।
এই অগ্নিকাণ্ডে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক, ওষুধসহ বিভিন্ন খাতের মাঝারি ও বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আমদানি করা কাঁচামাল পুড়ে গেছে বা আগুনের তাপে নষ্ট হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো সরকারের কোনো দপ্তর নিরূপণ করতে পারেনি। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী:
- বিজিএমইএ: ১০৮টি প্রতিষ্ঠানের ১২ লাখ ৫৮ হাজার ডলারের বা ১৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকার পণ্য ও কাঁচামাল পুড়ে গেছে।
- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস: প্রায় ১৫ লাখ ডলারের বা ১৮ কোটি টাকার ওষুধের কাঁচামাল এবং ৫ কোটি টাকার কাপড় পুড়েছে।
- অন্যান্য: প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড পয়েন্টের প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার ডলারের চিকিৎসা সরঞ্জাম পুড়েছে। মেট্রনিক বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রায় ১৫ লাখ ডলারের চিকিৎসা সরঞ্জামও আগুনে নষ্ট হয়েছে।
এনবিআরের তথ্যমতে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশের মোট আমদানির ৬ শতাংশ পণ্য আসে। আমদানি পণ্যের মধ্যে এক-চতুর্থাংশই রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল।
নাশকতার তদন্ত ও পণ্য খালাসের উদ্যোগ
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আগুনে পোড়া কার্গো ভিলেজ পরিদর্শনের পর জানান, তদন্তের ক্ষেত্রে নাশকতাসহ কোনো কিছুই উড়িয়ে দেওয়া হবে না, সবকিছুই আমলে নেওয়া হবে।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও ব্যবসায়ীরা পণ্য অক্ষত আছে কিনা জানতে গতকাল কার্গো ভিলেজের গেটের বাইরে ভিড় করেন, তবে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ ফ্রেইড ফরোয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএফএফএ) সাবেক পরিচালক নাসির আহমেদ খান জানান, শুক্র ও শনিবার আমদানি পণ্য খুব কম খালাস হয় বলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে।