বিগত ৩ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের বাদ দেওয়ায় ডিসি নিয়োগ নিয়ে প্রশাসন বিপাকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আর মাত্র তিন মাস পরই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগামী মাস ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নির্বাচনের আগে জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ‘যোগ্য’ কর্মকর্তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
যোগ্যতা সংকটের কারণ
সরকারের সিদ্ধান্ত হলো, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কোনো কর্মকর্তাকেই এবার নির্বাচনের সময় মাঠ প্রশাসনে রাখা হবে না। এই কারণে বর্তমানে ডিসি পদে নিয়োগের জন্য উপযুক্ত কর্মকর্তা খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে:
- অসহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা: ডিসি হওয়ার যোগ্য—এমন কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার (এআরও) দায়িত্বে ছিলেন। ফলে তারা বর্তমান শর্তানুযায়ী বাদ পড়ছেন।
- মাঠ প্রশাসনের অভিজ্ঞতা: ডিসি পদে নিয়োগের শর্ত হলো, মাঠ প্রশাসনে ন্যূনতম দুই বছর দায়িত্ব পালন করতে হবে। অনেক কর্মকর্তা আছেন, যারা এই শর্ত পূরণ করেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বিগত নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কাউকে এবার যুক্ত করা হচ্ছে না।
ডিসি পদে সাক্ষাৎকার ও রাজনৈতিক দাবি
জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে যোগ্য কর্মকর্তা খুঁজে বের করতে গত বুধবার থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেছে। বিসিএস ২৯তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে এবং আজ শনিবার পর্যন্ত এই ব্যাচের মোট ১১০ কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা রয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি হলো—জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া তিনটি নির্বাচনই ছিল বিতর্কিত। তাই বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ওই তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের এবারের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার দাবি জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেছেন, মাঠ প্রশাসনে বিশেষ করে ডিসি, এডিসি (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক), ইউএনওসহ (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) বিচারিক দায়িত্বে এমন কাউকে পদায়ন করা হবে না, যিনি গত তিনটি নির্বাচনের কাজে যুক্ত ছিলেন।
