
বিএনপি (বাঁ থেকে), জামায়াত, এনসিপি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বৈঠক রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিন দলই আলাদাভাবে সরকারের কিছু উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং কেউ কেউ তাঁদের অপসারণের দাবিও জানিয়েছে।
তবে এই তিন দলের অভিযোগের ধরন বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়—তারা শুধু সরকারের ওপর নয়, পরস্পরের বিরুদ্ধেও চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে। নির্বাচনের আগে প্রশাসনিক প্রভাবের প্রশ্নে একটি অঘোষিত প্রতিযোগিতা এখানে দৃশ্যমান।
দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থান
তিনটি দলই সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করেছে, কিন্তু জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি, গণভোটের সময় ও পথ-পদ্ধতি নিয়ে তারা এখনো একমত হতে পারেনি।
- আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সরকার এখন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের অপেক্ষায় আছে।
তিন দলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
| দল | প্রধান দাবি/পরামর্শ | অন্য দলের প্রতি অভিযোগের ইঙ্গিত |
|---|---|---|
| বিএনপি (মঙ্গলবার সাক্ষাৎ) | অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ। দলঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চাওয়া। | তাদের ধারণা, নির্দিষ্ট একজন উপদেষ্টা জামায়াতের স্বার্থ দেখেন। জনপ্রশাসন সচিব নিয়োগ নিয়ে অসন্তুষ্টি। |
| জামায়াতে ইসলামী (বুধবার সাক্ষাৎ) | বর্তমানে নির্বাচন কমিশন, সচিবালয় ও পুলিশ প্রশাসনে ৭০-৮০ শতাংশ কর্মকর্তা একটি দলের আনুগত্য করছেন, তাঁদের অপসারণের দাবি। | তাদের অসন্তুষ্টি কয়েকজন উপদেষ্টার প্রতি, যাঁদের মনে করা হয় বিএনপির স্বার্থ বেশি দেখেন। |
| এনসিপি (বুধবার সাক্ষাৎ) | প্রশাসনে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘ভাগ-বাঁটোয়ারা’ হচ্ছে, যেখানে উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকেও সহায়তা করা হচ্ছে। |
এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, বড় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে প্রশাসন, এসপি-ডিসি ভাগ-বাঁটোয়ারা করছে।
এদিকে, সরকারে থাকা উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে নানা বক্তব্য ও দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান নতুন কোনো সংকট তৈরি করে কি না, সেই আশঙ্কা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অবশ্য দলগুলোকে তাঁর ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন।
