নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলফাইল ছবি
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কারও কোনো সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) প্রয়োজন নেই। তবে দীর্ঘদিনের দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশের জাতির সেফ এক্সিট প্রয়োজন।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘খসড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫’ শীর্ষক জাতীয় পরামর্শ সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। আইন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই আয়োজন হয়।
জাতির সেফ এক্সিটের কারণ
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন:
”বাংলাদেশের জাতি হিসেবে সেফ এক্সিটের প্রয়োজন আছে। গত ৫৫ বছর দুঃশাসন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ছিল। এই ভয়াবহ রাষ্ট্রকাঠামো থেকে সেফ এক্সিট প্রয়োজন।”
আইন ও প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতা
উপদেষ্টা বলেন, ভালো আইন প্রণয়ন করলেও দেশটা ভালো হয়ে যাবে না, কারণ দেশে প্রতিষ্ঠান করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা রয়েছে।
- বিচারপতি নিয়োগ: তিনি বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানে ভালো বিধান ছিল যে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই তা হয়েছে।
- মানবাধিকার লঙ্ঘন: আসিফ নজরুল বলেন, এমন প্রধান বিচারপতিও ছিলেন, যাঁরা মানবাধিকার ধ্বংসে এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র ধ্বংসে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁদের কেউ কেউ এখনো রয়ে গেছেন।
- ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা: তিনি মনে করেন, ভালো আইন ফাউন্ডেশন, কিন্তু প্রতিষ্ঠানকে ভালো হতে হবে। “সরকারে এসে মনে হয়েছে, সব ব্যক্তিকেন্দ্রিক, প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক।”
আলোচনার সূত্রপাত
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, “উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবতেছে।” তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছিল।
সভায় আরও বক্তব্য দেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ।