
সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক ও
প্রতিনিধি
সাভার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ২৫
১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের একাংশের প্যানেল সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় (রেজি নম্বর-৪৬৯৮৪) জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা মোতাবেক ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করা হলো
জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ নম্বর ধারায় বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়মিত ও বৈধ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংসদের সদস্য বলে গণ্য হবেন। কেবল তাঁরাই ভোটার বলে বিবেচিত হবেন এবং শিক্ষার্থী সংসদের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। এ ধারায় কিছু শর্ত রয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে (৪+২) ছয় বছর অথবা স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে (১+১) দুই বছর ধরে অধ্যয়ন করছেন, কেবল সেসব শিক্ষার্থীর নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং তাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের নিয়মিত ছাত্রত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অমর্ত্য রায় নিয়মিত ছাত্রত্ব না থাকায় তাঁকে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে রায় দেয় সিন্ডিকেট। এরপর আজ নির্বাচন কমিশন থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাঁর প্রার্থিতা বাতিলের তথ্য জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শাখা সূত্রে জানা গেছে, অমর্ত্য রায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তিনি ২০২১ সালের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে অংশ নেন এবং ৪০৭ ও ৪০৮ নম্বর কোর্সে অকৃতকার্য হন। পরের ব্যাচের সঙ্গে ২০২২ সালে অকৃতকার্য কোর্স দুটির পরীক্ষা দিয়ে আবার অকৃতকার্য হন। এরপর বিশেষ বিবেচনায় ২০২৩ সালে ৪৯তম ব্যাচের সঙ্গে তিনি আবার দুটি পরীক্ষা দিলেও ৪০৮ নম্বর কোর্সে অকৃতকার্য হন। এরপর গত বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট সভায় তাঁকে বিশেষ বিবেচনায় একটি কোর্সে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে জাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিবেশন করা। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিনি ভোটাধিকার হারিয়েছেন। তাই তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব ও প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, অমর্ত্য রায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অকৃতকার্য বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। এ বিষয়ে গত সিন্ডিকেট সভায় একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুসারে গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী তিনি ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ বিষয় অমর্ত্য রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন অন্যায়ভাবে আমার বহিষ্কার করেছিল। বহিষ্কার হওয়ার এক মাস পর স্নাতক চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল বের হয়। পরীক্ষা খারাপ হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে পরীক্ষা দিতে হবে, তাই বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করি। এতে শুধু ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। ১০ মাস ক্লাস পরীক্ষা, ল্যাব করার সুযোগ পাইনি। ওই হিসাবে প্রশাসনের কাছে আমি ১০ মাস পাই।’ তিনি বলেন, ‘এখানে নির্বাচন কমিশনের যেসব ব্যত্যয় রয়েছে, সেগুলো ধরে আমরা কমিশনের কাছে উপস্থাপন করব। এ বিষয়ে সবার মতামত নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় যাব।