
রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির এক সভায় বক্তব্য দেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ২৪ অক্টোবর ছবি:
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নিজেদের পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে দুই দলকেই কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছেন।
আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে এনসিপির এক সভায় বক্তব্যে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করেন:
- গত ৫২ বছরে বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে বাংলাদেশে ‘জিয়াতন্ত্র’ কায়েম এবং জামায়াতে ইসলামী ইসলামের কথা বলে ‘মওদুদিতন্ত্র’ কায়েমের চেষ্টা চালিয়েছে।
- তিনি বলেন, “নতুন করে মওদুদিবাদ ও জিয়াবাদের গর্ত আমাদের সামনে আবির্ভূত হয়েছে। আমাদের মঞ্জিলে মকসুদ হলো বাংলাবাদ।”
নির্বাচনী জোট ও আকাঙ্ক্ষা
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোট গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে না দিলেও, তা হবে দল দুটির ভূমিকার ওপর নির্ভর করে।
- জোটের ভিত্তি: তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিতে নতুন একটি সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যারা যাবে, তাদের সঙ্গেই এনসিপি’র আগামীর জোট হবে। এ ক্ষেত্রে বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামী এগিয়ে এলে এনসিপি দুই পা এগিয়ে যাবে।
- সংসদের লক্ষ্য: তিনি মন্তব্য করেন, আগামীর সংসদে জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিনিধি দেখতে চান না, জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগমুক্ত একটি সংসদ চান।
সরকার ও অন্যান্য সংস্থাকে বার্তা
- প্রধান উপদেষ্টার প্রতি: তিনি প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, “জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যার বিচার করুন।” তিনি সতর্ক করেন, প্রধান উপদেষ্টা পিছপা হলে জনগণ তাঁকে অসম্মানও জানাতে পারবে।
- রাষ্ট্রপতির আপত্তি: তিনি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আপত্তি তুলে বলেন, তাঁরা রাষ্ট্রপতির হাত দিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর চান না, চান অবশ্যই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের স্বাক্ষর।
- নির্বাচন কমিশন ও সেনা সংস্কার: তিনি নির্বাচন কমিশনে ‘গ্যাংবাজি, দলবাজি’ না করার দাবি জানান এবং নির্বাচন কমিশনকে ‘মিলিটারিমুক্ত’ ও ‘জিয়াবাদ মুক্ত’ করার কথা বলেন। এছাড়া তিনি প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থায় (ডিজিএফআই) সংস্কার আনার আহ্বান জানান এবং গুমের বিচার নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।
- ছাত্রশিবিরকে হুঁশিয়ারি: ডাকসু নির্বাচনে জয়ী ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তাঁরা যদি জামায়াতের কার্যক্রম হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করেন, তাহলে ছাত্ররা তাঁদের ডাকসু ভবন থেকে টেনেহিঁচড়ে জনতার কাতারে নিয়ে আসবে।
