
প্লুটোছবি: নাসা
প্রযুক্তি ডেস্ক।
একসময় আমাদের সৌরজগতের নবম গ্রহ হিসেবে পরিচিত ছিল প্লুটো। ১৯৩০ সালে আবিষ্কারের পর দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে প্লুটোই ছিল সৌরজগতের শেষ সীমানার প্রতীক। তবে ২০০৬ সালের আগস্টে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন (আইএইউ) এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেয়, যার কারণে প্লুটো তার গ্রহের মর্যাদা হারায় এবং বামন গ্রহের শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হয়।
গ্রহের সংজ্ঞা ও প্লুটোর ব্যর্থতা
২০০৬ সালে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো গ্রহের আনুষ্ঠানিক সংজ্ঞা নির্ধারণ করেন। গ্রহ হতে হলে অবশ্যই তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে:
- বস্তুটিকে অবশ্যই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে হবে।
- বস্তুটির নিজস্ব মহাকর্ষ বলের কারণে প্রায় গোলাকার আকৃতি থাকতে হবে।
- বস্তুটিকে তার কক্ষপথের অঞ্চলে মহাকর্ষীয়ভাবে শক্তিশালী হতে হবে (শক্তিশালী কক্ষপথ অনুসরণ করতে হবে)।
প্লুটো প্রথম দুটি শর্ত পূরণ করলেও তৃতীয় শর্ত পূরণ করতে পারেনি।
কেন প্লুটো শক্তিশালী নয়?
- প্লুটো সূর্যের বাইরে কুইপার বেল্ট অঞ্চলে অবস্থিত, যা বরফ ও শিলাযুক্ত ছোট ছোট বস্তু দিয়ে পূর্ণ।
- প্লুটোর নিজস্ব ভর তার কক্ষপথের অন্য সব বস্তুর মোট ভরের তুলনায় অনেক কম।
- প্লুটো এই অঞ্চলে একচেটিয়া মহাকর্ষীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, বরং এর কক্ষপথ কুইপার বেল্টের অসংখ্য বস্তুর সঙ্গে ভাগ করে চলে।
- পৃথিবীর মতো গ্রহগুলো তাদের কক্ষপথে ৯০ শতাংশের বেশি বস্তুকে আকর্ষণ বা বিতাড়িত করে মহাকর্ষীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। প্লুটো সেই মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
বামন গ্রহ
যেসব বস্তু গ্রহের প্রথম দুটি শর্ত পূরণ করে, কিন্তু তৃতীয় শর্ত অর্থাৎ শক্তিশালী কক্ষপথ অনুসরণ করে না, সেগুলোকে বামন গ্রহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে প্লুটো ছাড়াও এরিস, সেরেস, হাউমেয়া ও মেকেমেকে হলো পরিচিত বামন গ্রহ।