
মোহাম্মদ উল্যা
নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় পুলিশের গাড়িতেই মারজান উদ্দিন (২৯) নামে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন ইলিয়াস ও তাঁর অনুসারী যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের দিকে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও থানা প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে। ইতিমধ্যে থানায় হট্টগোল সৃষ্টির চেষ্টার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত
গত বৃহস্পতিবার এক বিয়েতে নিজ গ্রামের হুজুরকে দাওয়াত না দেওয়া নিয়ে মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার হেলাল মাঝি এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিনের (মারজান উদ্দিনের বড় ভাই) মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। রোববার সকালে শাহাব উদ্দিনকে হেলাল মাঝির নেতৃত্বে মারধর করা হলে শাহাব উদ্দিনের ভাই মারজান ও নাজিম ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তাদের বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে আহত করা হয় এবং পরে তাদের দুটি বসতঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
পুলিশের গাড়িতে হামলা
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ শাহাব উদ্দিন ও মারজানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। গুরুতর আহত শাহাব উদ্দিন ও মারজানকে হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে আসার পথে হাসপাতালের ফটকের সামনে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইলিয়াসের নেতৃত্বে পুলিশের গাড়িতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মিরা হামলা চালায়।
পুলিশের উপস্থিতিতেই পুলিশের গাড়িতে মারজানের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁর শরীর থেকে সব ব্যান্ডেজ খুলে নেওয়া হয়। পরে থানার সামনে গিয়েও তারা ব্যাপক হট্টগোল সৃষ্টি করে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে উপপরিদর্শক (এসআই) মিনহাজুলকে যুবদল নেতাকে উদ্দেশ্য করে বলতে শোনা যায়, “আমার সামনে আসামিকে মারধর করে কিভাবে।”
দলীয় কোন্দল ও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক বাবর আজম অভিযোগ করে বলেন, ইলিয়াসের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আগে থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবের রহমান শামীমের অনুসারী হওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
অন্যদিকে, যুবদল আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন ইলিয়াস অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, তাঁর উপস্থিতিতে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। তিনি উল্টো দলীয় নেতাকর্মীদের মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাদের এই সমস্যা প্রথমে ছিল বিয়ে নিয়ে, পরে তা এনসিপি বনাম বিএনপি হয়ে গেছে।
আহতদের মধ্যে এক নারীসহ দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে।