বৃষ্টি, উচ্চ তাপমাত্রা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নিষ্ক্রিয়তাই মূল কারণ: অধ্যাপক কবীরুল বাশার

প্রতীকি ছবি।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, ‘রোগতাত্ত্বিক ত্রিভুজ’—অর্থাৎ জীবাণু (মশা), রোগী এবং পরিবেশ—এই তিনটির কোনোটিই নিয়ন্ত্রণে না আসায় ডেঙ্গুর প্রকোপ কমার সম্ভাবনা নেই। গতকাল শুক্রবার অক্টোবর মাস শেষ হলো, যা সংক্রমণ ও মৃত্যু—দুই দিক থেকেই ছিল বছরের শীর্ষে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতির বিশ্লেষণ
| মাস | হাসপাতালে ভর্তি (জন) | মৃত্যু | মন্তব্য |
| অক্টোবর | ২২,৫২০ | ৮০ | সংক্রমণ ও মৃত্যুতে বছরের শীর্ষে |
| সেপ্টেম্বর | ১৫,৮৬৬ | (উল্লেখ নেই) | রোগীর সংখ্যা আগস্টের চেয়ে বৃদ্ধি |
| চলতি বছর (মোট) | ৬৯,৮৮৬ | ২৭৮ | গত বছরের চেয়ে রোগী সংখ্যা বেশি |
বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫০৩ জন। এ সময় কারও মৃত্যু হয়নি।
জনস্বাস্থ্যবিদের উদ্বেগ
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, “অক্টোবরের শেষ সময়ে এসে এই বৃষ্টি আমাদের ভোগাবে। নভেম্বরে ডেঙ্গুর বিস্তার কমার সম্ভাবনা কম।“
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রোগতাত্ত্বিক ত্রিভুজকে রুখে দেওয়ার কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। গ্রামে-গঞ্জে এডিস মশা ছড়িয়ে পড়েছে, কিন্তু তার নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৃশ্যমান কাজ দেখা যাচ্ছে না।
ঢাকায় ও পার্শ্ববর্তী জেলায় বাড়ছে রোগী
চলতি বছর ডেঙ্গুর একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এবার ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরে রোগীর সংখ্যা বেশি। তবে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ঢাকায় রোগী বাড়তে শুরু করেছে।
- ঢাকার বাইরের চিত্র: ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, ঢাকায় ভর্তি রোগীদের অন্তত ৫০ শতাংশ ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
- নারায়ণগঞ্জ: সেপ্টেম্বরে রোগী সংখ্যা ছিল ৭৩০, কিন্তু অক্টোবরের শেষে এসে তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩১০ জন। অর্থাৎ শুধু অক্টোবরে আগের নয় মাসের তুলনায় রোগী দ্বিগুণ হয়েছে।
- গাজীপুর: সেপ্টেম্বরে রোগী ছিলেন ১ হাজার ৬৬১ জন, কিন্তু অক্টোবরের শেষ দিন পর্যন্ত রোগী হয়েছেন ২ হাজার ৯৯৩ জন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের পক্ষ থেকে জুনে সতর্কবার্তা দেওয়ার পরও গা-ছাড়া ভাব থাকায় জুলাই থেকে প্রকোপ বেড়েছে এবং বর্তমানে এই দুই মাস ধরেই রোগ ও মৃত্যু বাড়ছে।
