জামালপুর প্রতিনিধি
২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রকৃতি এখন শরতের রূপে সেজেছে। কখনো মেঘে আচ্ছাদিত আকাশ, আবার কখনো শান্ত-স্বচ্ছ নীল। আবার কখনো হঠাৎ করেই ঝড়ছে বৃষ্টি। এরই মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে জামালপুরে দিনে ভ্যাপসা গরম আর রাতে ও ভোরে কুয়াশার আবরণ দেখা যাচ্ছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোর সকালে জামালপুরে বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশা লক্ষ্য করা গেছে। গত কয়েকদিন ধরেই এমন কুয়াশা দেখা যায়।
আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পরিস্থিতি নতুন নয়। আগের বছরগুলোতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দিনের বেলায় ভ্যাপসা গরম আর রাতে কুয়াশা এমন অস্বাভাবিক আবহাওয়া দেখা দিচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে জামালপুরে সূর্যোদয় হচ্ছে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে এবং সূর্যাস্ত হচ্ছে সন্ধ্যা ৬টার দিকে। ভোরে প্রায় দুই ঘণ্টা তাপমাত্রা কম থাকে, আবার সূর্যাস্তের আধাঘণ্টার মধ্যেই তাপমাত্রা হ্রাস পায়। এতে সন্ধ্যা নামতেই কুয়াশার উপস্থিতি দেখা যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, শরতের দিনে ভ্যাপসা গরমের পাশাপাশি রাতে তাপমাত্রা কিছুটা কমে যাওয়ার ফলে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। তাই সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জামালপুরের চরপলিশা এলাকার কয়েকজন কৃষক বলেন, গত চার-পাঁচ দিন ধরে রাতের বেলায় কুয়াশা দেখা যায়। সকালে ধানক্ষেতে গেলে দেখা যায়- ধানের পাতার ওপর কুয়াশা পড়েছে। এবার শীত আগেভাগেই আসতে পারে মনে হচ্ছে। জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। সোমবার ৩ দশমিক ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। বর্তমানে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৫ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুরাদ আহমেদ ফারুখ বলেন, ‘দিনে গরম আর রাতে কুয়াশা নতুন কিছু নয়, আগেও এমন দেখা গেছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শীতকাল ক্রমেই ছোট হচ্ছে- আগে শুরু হয়ে হঠাৎ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষি, জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নির্গমন নিয়ন্ত্রণ, বৃক্ষরোপণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার ও পরিবেশবান্ধব নীতি বাস্তবায়ন জরুরি। না হলে ঋতুর সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে।’ জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তারিকুল ইসলাম রনি বলেন, ‘শরৎকালে দিনে গরম ও রাতে কিছুটা ঠান্ডা অনুভূত হয়। ঠান্ডা-গরমের কারণে শীতজনিত সর্দিকাশিসহ বিভিন্ন রোগের দেখা দিতে পারে। এই সময় শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার সঙ্গে যতœ নিতে হবে। এ ছাড়া ধুলোবালু আর কুয়াশা থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহার করা ভালো।’