দীর্ঘ অবরোধের পর শহরের দখল নিয়েছে আরএসএফ; জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বললেন

সুদানে চলমান সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষ অস্থায়ী তাবুতে বসবাস করছে।ছবি: এএফপি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের শহরের দখল করে নেয়। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় আরএসএফ।
গণহত্যার প্রমাণ ও নাগরিকদের দুর্ভোগ
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
- ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা: ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব জানিয়েছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি’। এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে’। সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
- প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ: এল-ফাশের থেকে পালিয়ে আসা কয়েকজন ব্যক্তি জানিয়েছেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে। পাঁচ সন্তানের মা হায়াত বলেন, “আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।”
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে শহরটিতে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত। বর্তমানে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ আল-ফাশের থেকে পালিয়েছে এবং এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, “সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।” তিনি আরএসএফকে নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার রক্ষার জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানান।
