লেখা: দিনার হসাইন।

কাগজপত্র একেবারেই খুঁজে না পেলে অবিলম্বে কাছের পুলিশ স্টেশনে গিয়ে লস্ট রিপোর্ট বা জিডি করুন।ছবি: ফ্রিপিক।
দেশের বাইরে ভ্রমণে গিয়ে যদি পাসপোর্ট, ভিসা বা জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো জরুরি কাগজপত্র হারিয়ে যায় বা চুরি হয়ে যায়, তবে তা একটি বড় ধরনের সমস্যা। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
বিদেশে জরুরি কাগজপত্র হারালে কী করণীয়, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি গোযায়ানের ব্র্যান্ড ম্যানেজার সাবিক মাহমুদ খান।
হারানো কাগজপত্র উদ্ধারে প্রথম পদক্ষেপ
সাবিক মাহমুদ খান বলেন, এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে প্রথমেই নিজেকে শান্ত রাখতে হবে। আতঙ্কিত হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
- খোঁজখবর নিন: সম্প্রতি যেসব জায়গায় গিয়েছেন—যেমন হোটেলের লবি, রেস্টুরেন্ট, দোকান বা ট্যাক্সি—এসব স্থানে খোঁজ নিন। অনেক সময় কাগজপত্র ভুলবশত কোথাও পড়ে থাকতে পারে।
- পুলিশ রিপোর্ট বা জিডি: কাগজপত্র একেবারেই খুঁজে না পেলে অবিলম্বে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে গিয়ে লস্ট রিপোর্ট বা জিডি করুন। এতে ভবিষ্যতে পুনরায় পাসপোর্ট বা ভিসা ইস্যুর সময় আইনি ঝামেলা কমবে। পুলিশ রিপোর্টের একটি কপি সংগ্রহ করতে ভুলবেন না।
দূতাবাসে যোগাযোগ ও দেশে ফেরার প্রক্রিয়া
পুলিশ রিপোর্টের পর দ্রুত বাংলাদেশ দূতাবাস বা হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
- ট্রাভেল ডকুমেন্ট: দূতাবাস আপনাকে একটি ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিতে পারে, যা দিয়ে আপনি দেশে ফিরতে পারবেন। কিছু ক্ষেত্রে অস্থায়ী পাসপোর্টও ইস্যু করা হয়।
- প্রয়োজনীয় নথি: দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের সময় পুলিশ রিপোর্ট, পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি (যদি থাকে), ভিসার কপি এবং পাসপোর্টের পূর্বের তথ্য দিয়ে রাখুন।
সাবিক মাহমুদ খান জানান, ‘ইমার্জেন্সি ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ বা ‘টেম্পোরারি পাসপোর্ট’ পাওয়ার প্রক্রিয়ার জন্য সাধারণত একটি আবেদন ফরম পূরণ করতে হয়, সঙ্গে ছবি, পুরোনো পাসপোর্ট বা নাগরিকত্ব প্রমাণ ও পুলিশ রিপোর্ট জমা দিতে হয়। এই নথি সীমিত সময়ের জন্য শুধু দেশে ফেরার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।
ভ্রমণের আগে যা নিশ্চিত করবেন
ভ্রমণের আগে কাগজপত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনি কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থার ওপর জোর দেন:
- ডিজিটাল কপি: সব সময় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের ডিজিটাল কপি (স্ক্যান বা ছবি) গুগল ড্রাইভ অথবা ই-মেইলে সেভ করে রাখুন।
- নথি আলাদা রাখুন: হার্ড কপি ও পাসপোর্ট আলাদা জায়গায় রাখুন। সব কাগজপত্র একটি ব্যাগে না রাখাই ভালো।
- নিরাপত্তা: হোটেলের সেফ বক্সে মূল পাসপোর্ট রেখে বাইরে সব সময় ফটোকপি নিয়ে বের হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
- যোগাযোগের তথ্য: যেকোনো জরুরি প্রয়োজনের জন্য দূতাবাস ও ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানের ফোন নম্বর সংরক্ষণ করুন।
ট্রাভেল ইনস্যুরেন্সের সুবিধা
সাবিক মাহমুদ খান ট্রাভেল ইনস্যুরেন্সের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ইনস্যুরেন্স থাকলে কিছু সহায়তা পাওয়া যায়:
- পাসপোর্ট হারালে পরিচয় প্রমাণের ঝামেলা সহজ হয়।
- অতিরিক্ত খরচের ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা মেলে।
- দূতাবাসে যোগাযোগ ও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ক্ষেত্রেও ইনস্যুরেন্স সহায়ক ভূমিকা রাখে।
এসব বিষয়ে সহায়তা পেতে অবশ্যই পুলিশ রিপোর্ট ও সব ধরনের ব্যয়সংক্রান্ত রসিদ সংরক্ষণ করে রাখতে হয়।
ট্রাভেল এজেন্সিগুলো থেকেও সহায়তা মেলে। বিশ্বস্ত অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ফ্লাইট টিকিট হারিয়ে গেলে পুনরায় টিকিট পাঠাতে বা রিইস্যু করতে এবং বিকল্প ভ্রমণ পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা করে।