আজ দুপুরে নগরের মুরাদপুরে জশনে জুলুসে পদদলিত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মাহফুজসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এর মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে আহাজারি করছেন জুলুসে পদদলিত হয়ে মারা যাওয়া কিশোর সাইফুল ইসলামের স্বজনেরা। আজ বেলা আড়াইটার দিকে তোলাছবি:
ফাহিম আল সামাদ
চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ০৫
চারদিকে অনেক মানুষ। রোদের তাপও অনেক বেশি। মানুষের ভিড়ের মধ্যে নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না। একপর্যায়ে মাথা ঘুরে নিচে পড়ে গেছি। মানুষের পায়ের নিচে চাপা পড়ে মরার অবস্থা, মনে হইছিল আর বাঁচব না। তবে কয়েকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসায় জানে বাঁচছি।’
আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের শয্যায় শুয়ে কথাগুলো বলছিলেন নগরের আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা মো. মাহফুজ (৩৫)। চট্টগ্রামের মুরাদপুরে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত জশনে জুলুসে পদদলিত হয়ে চিকিৎসাধীন তিনি। মাহফুজের সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন তাঁর হাতে স্যালাইন চলছিল।
বোরহান উদ্দিন, আইয়ুব আলীর ভাগনে
মাহফুজ প্রাণে রক্ষা পেলেও আজ দুপুরে নগরের মুরাদপুরে জশনে জুলুসে পদদলিত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মাহফুজসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এর মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পদদলিত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের একজন আইয়ুব আলী (৬০)। তাঁর বাড়ি পটিয়া উপজেলায়। জশনে জুলুসে অংশ নিতে সকালে নগরে আসেন তিনি। দুপুরে মুরাদপুরে পদদলিত হওয়ার পর তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আজ বেলা দুইটার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে গিয়ে দেখা যায়, আইয়ুব আলীর লাশের পাশে আহাজারি করছেন তাঁর ভাগনে বোরহান উদ্দিন (৪০)। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একসঙ্গে সবাই জুলুসে এসেছি। মানুষের ভিড়ের মধ্যে মামা (আইয়ুব আলী) বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। আমরা ভেবেছি, মামা হয়তো পাশেই আছেন। এর মধ্যেই ফোন আসে, মামাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে এসে দেখি তিনি আর বেঁচে নেই।’
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী ইনচার্জ সোহেল রানা। আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। তবে বয়স ২৩-২৪ এর আশপাশে। এখনো জ্ঞান ফেরেনি তাঁর।’
হতাহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া ট্রাস্টের মেডিকেল টিমের সদস্যরা। তাঁদের একজন আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষের ভিড়ের মধ্যে গরমে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকজন নিচে পড়ে যান। এ সময় পদদলিত হয়েছেন তাঁরা। আহত অবস্থায় আমরা তাঁদের উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে নিয়ে আসি।