নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।

রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশে এলপিজি: অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে বক্তব্য দিচ্ছেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এই সম্মেলনের আয়োজন করে দৈনিক বণিক বার্তা। আজ শনিবার সকালেছবি: বণিক বার্তার সৌজন্যে।
বাজারে অতিরিক্ত দামে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
আজ শনিবার দৈনিক বণিক বার্তা আয়োজিত ‘বাংলাদেশে এলপিজি: অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ব্যবসায়ীদের দায় ও দাম কমানোর আহ্বান
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, এলপিজি খাতে অতিরিক্ত মুনাফা করা ব্যবসায়ীদের দায় নিতে হবে:
”১২০০ টাকার এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি হয় ১৪০০ টাকায়। এটার দায় নিতে হবে ব্যবসায়ীদের। দায়-দায়িত্বহীন ব্যবসা তো চলতে পারে না। ১২ কেজির সিলিন্ডার ১ হাজার টাকার কমে বিক্রি হওয়া উচিত।“
তিনি ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফা করে সম্পদের পাহাড় গড়ে বিদেশে টাকা পাচার করার মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানান।
জ্বালানি সংকটের কারণ ও এলপিজির সমাধান
উপদেষ্টা ফাওজুল জ্বালানি সংকটের জন্য এক শ্রেণির রাজনীতিবিদ ও তাদের সহযোগী ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘জ্বালানি নিশ্চিত না করেই চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে। গ্যাস খাতে অসংখ্য অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব অপকর্ম করেছেন রাজনীতিবিদেরা।’
তিনি মনে করেন, জ্বালানি সংকটে এলপিজি একটা বড় সমাধান হতে পারে, যদিও এর দাম একটা চ্যালেঞ্জ।
বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া ও অন্য বিশেষজ্ঞদের মত
- আব্দুল মঈন খান (বিএনপির নেতা): তিনি উপদেষ্টা ফাওজুলের দোষারোপের মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের দোষারোপের কিছু নেই। বাংলাদেশের গ্যাসের ঘাটতি পূরণের জন্য এখন থেকেই সুপরিকল্পনা করতে হবে।
- ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ম. তামিম (মূল প্রবন্ধ): তিনি জানান, দেশে বর্তমানে দিনে ১৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি আছে। শিল্পে গ্যাস সংকট কাটাতে এলপিজি ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ডিজেলচালিত বয়লার এলপিজি দিয়ে চালালে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ খরচ কমানো সম্ভব।
- আমিরুল হক (লোয়াব সভাপতি): তিনি বলেন, এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করে বিইআরসি। তবে ব্যবসায়ীদেরকে কথায় কথায় লুটেরা বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা উচিত নয়।
- আজম জে চৌধুরী (ইস্ট কোস্ট গ্রুপ): তিনি উপদেষ্টাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, আমদানিকারকদের ৭ শতাংশ মুনাফা দিয়ে যদি তিনি ১ হাজার টাকায় এলপিজি বিক্রি করতে পারেন, তবে করে দিন।
বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, ডলারের দর ও সৌদি আরামকোর বিক্রয় মূল্য ধরে প্রতি মাসে এলপিজির দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। মূল লক্ষ্য হলো, ভোক্তা যাতে কম দামে এলপিজি পায়।